যুক্তরাজ্যে আসার ৫টি ভিসা, আশা করি আপনারা সবাই অনেক বেশি ভালো আছেন। আজকে প্রায় দুই থেকে তিন মাস হয়ে গেল, আর এডিট করব কোন সময়, আপলোড দিব কোন সময়। তো চিন্তা করলাম, আপনাদের আমার একটা আর্টিকেল অনেক বেশি কমেন্ট পেয়েছি।
যে কমেন্টগুলো পড়ে মনে হলো যে আসলে মাঝে মধ্যে ছোটখাট আর্টিকেল এত ফরমালি না হলেও, ইনফরমালি হলেও আপনাদেরকে দেওয়া উচিত। সো কথা না বাড়িয়ে আজকে যেটা বলার জন্য আসলাম সেটা বলে নেই। আজকে আমি আপনাদেরকে পাঁচ ধরনের ভিসার কথা বলব।
যে পাঁচ ধরনের ভিসায় বর্তমানে ইউকেতে আসার সুযোগ রয়েছে। যেকোনো মানুষ, যদি আপনাদের স্কিল থাকে, যোগ্যতা থাকে, তাহলে আপনারা অবশ্যই ইউকেতে অবশ্যই আসতে পারবেন। আপনাদেরকে কেউ আটকাতে পারবে না।
সো আমি এর পাঁচ নম্বর যে ভিসাটির কথা বলব, সেই ভিসাটি হচ্ছে সবচাইতে সহজলভ্য যেটা সহজে পাওয়া যায়। এবং যারা আমার মতো গরিব রয়েছেন, এক বস্তা টাকা যারা একসাথে করতে পারবেন না, তাদের জন্য হচ্ছে পাঁচ নম্বর ভিসাটা। সো সবাই পাঁচ নম্বর ভিসাটার কথা শুনে তারপরে সামনের দিকে আগাবেন।
১. গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা
আমি যে পাঁচটা ভিসার কথা বলবো, সেই পাঁচটা ভিসার মধ্যে প্রথম ভিসাটি হলো গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসা। সো গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসাটা মানে কি? এটা আবার সবার জন্য না। এটা হচ্ছে অসাধারণ মানুষদের জন্য। অসাধারণ মানুষ কারা? যারা হচ্ছে যেমন আন্তর্জাতিক মহল থেকে যারা কোনো অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, কোনো পুরস্কার পেয়েছেন, যেটা সারা বিশ্ববাসী জানেন, বা কোনো ভালো অনেক ভালো ডিগ্রি রয়েছে যাদের কোনো অনেক বড় ইউনিভার্সিটি থেকে।
আরো পড়ুন: সৌদিতে নুন কোম্পানিতে নিয়োগ
তারা হচ্ছে গ্লোবাল ট্যালেন্ট হিসেবে বিবেচিত। তো এরা এদেরকে কেন ভিসা দিয়ে থাকে? কারণ এরা হচ্ছে এই দেশে আসার পরে তারা এই দেশের জন্য, এই জাতির জন্য কিছু একটা করতে পারবে। হয়তোবা এইজন্য তাদেরকে ভিসা দিয়ে থাকে। তো আপনি যদি এরকম গ্লোবাল ট্যালেন্ট ওয়ালা কেউ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই এপ্লাই করে ব্রিটিশ ইউকে আসার ভিসা পেতে পারেন।
২. ইনোভেটর ভিসা বা ফাউন্ডার ভিসা
ওকে, দুই নম্বর যে ভিসাটার কথা বলব, সেটা হচ্ছে ইনোভেটর ভিসা বা ফাউন্ডার ভিসা। আচ্ছা আপনারা এটা শুনেই অনেকেই বুঝতে পারবেন যে ইনোভেটর ভিসা বা ফাউন্ডার ভিসা মানে কী বুঝায়? ইনোভেশন মানে কী? কোনো কিছু সৃষ্টি করা।
ফাউন্ডার মানে কী? কোনো কিছু প্রতিষ্ঠা করা। কোনো কিছু তৈরি করা। তাহলে এটা নাম থেকেই বুঝা যায় যে ভিসাটা কী ধরনের ভিসা হতে পারে। যেমন, আপনার কাছে কোনো ইউনিক একেবারে ইউনিক, অনন্য কোনো আইডিয়া আছে। যেমন আমি এক যদি এক্সাম্পল দেই, আমাদের দেশে পাঠাও রয়েছে। তো আপনারা তো জানেন কারা পাঠাও আবিষ্কার করেছিল বা কারা এটা তৈরি করেছিল।

এরকম কোনো ভালো কোনো আইডিয়া যদি আপনার কাছে থাকে, যেটা এখন পর্যন্ত কোনো দেশে কেউই যে আইডিয়াটা তৈরি করতে পারেনি, যে আইডিয়াটা কেউই ইনোভেশন করতে পারেনি, আবিষ্কার করতে পারেনি, সেই আইডিয়াটা যদি আপনি তাদেরকে দেখাতে পারেন, তখন তারা যদি মনে করে যে এই আইডিয়াটা অনেক ভালো একটা আইডিয়া, যেটা ভবিষ্যতে তাদের জন্য অনেক ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে।
তখন তারা আপনাকে ভিসা দিতে পারে। যদি আপনি এইরকম একটি ভিসা ম্যানেজ করে ফেলতে পারেন, তাহলে কিন্তু আপনি তিন বছরে এই দেশের আইএলআর পেতে পারেন। তো আপনি চিন্তা করে দেখবেন আপনার এরকম কোনো আইডিয়া আছে কিনা, যেটা আপনি শো করে আপনি ব্রিটিশ ভিসা পেতে পারেন।
৩. স্কিলড ওয়ার্কার ভিস
তিন নম্বরে আমি যে ভিসাটার কথা বলব, সেটা হচ্ছে স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা। সো আপনি ভিসার নাম থেকেই কিন্তু বুঝতে পারেন যে স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা মানে কী? আপনার কোনো স্কিল রয়েছে, যে স্কিলটার জন্য আপনাকে কেউ ভিসা স্পন্সর করবে এবং এই ভিসা স্পন্সর করার কারণে সরকার আপনাকে ভিসা দিবে। আপনি ওই ভিসা নিয়ে এই দেশে আসতে পারবেন।
তো এই ভিসাটা হচ্ছে প্রথমে অনেকে তিন বছরের জন্য এপ্লাই করে। আবার অনেকে ডাইরেক্ট পাঁচ বছরের জন্য এপ্লাই করে। তো তিন বছরের জন্য এপ্লাই করে যদি আপনি এখানে আসেন, তারপরে তিন বছর পরে আবার আপনি দুই বছরের জন্য আপগ্রেড করবেন। পাঁচ বছর পরে আপনি কিন্তু এই দেশের আইএলআর-এর জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। তার এক বছর পরে আপনি সিটিজেনশিপের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
সো শুনতে কিন্তু খুব ভালো মনে হচ্ছে এবং এটা ভালো। আপনি যদি একটা জেনুইন ভালো কোম্পানিতে আপনি যদি এই ভিসা ম্যানেজ করতে পারেন, তাহলে কিন্তু আপনি লাকি। কিন্তু এই ভিসার বর্তমানে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে যে চ্যালেঞ্জগুললা হয়তোবা এই আর্টিকেলকাভার করা সম্ভব হবে না। কিন্তু আপনাদেরকে একটা গ্লিমস দিয়ে দিই আমি।
এই ভিসা ম্যানেজ করতে হলে আপনাকে বর্তমানে কোম্পানি থেকে যে আপনি স্পন্সরশিপ পাবেন, আপনার স্যালারি থ্রেসহোল্ড মিট করতে হবে। যেমন, আপনাকে ৩৮,৭০০ পাউন্ড আপনার বেতনের থ্রেসোল্ড থাকতে হবে। তো এই বেতন থ্রেসল্ডের জন্য এখন বর্তমানে ভিসা পাওয়াটা খুবই দুষ্কর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৪. কেয়ার ভিসা
চার নম্বরে আমি যে ভিসাটার কথা বলব, সেটা হচ্ছে কেয়ার ভিসা। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের সবচাইতে বেশি পরিচিত একটা ভিসা। যে ভিসায় অনেক বেশি মানুষ এই দেশে এসেছেন। সো এই কেয়ার ভিসার কাজ হচ্ছে কেয়ার হোমগুলাতে। মানে আমাদের দেশের যে বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে সেই এই দেশে হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমকে কেয়ারহোম বলা হয়।
এই ভিসাটায় আসার জন্য আপনি যদি জেনুইন কোম্পানি থেকে ভিসা নেন, তাহলে আপনি কম টাকায় আসতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি কারো সাথে কন্টাক্ট করে আসেন, তখন আপনার ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ, ৩৫ লক্ষ টাকাও অনেক সময় খরচ হয়ে যাচ্ছে।
ডিপেন্ড করছে আপনি কোন মালিকের কাছ থেকে ভিসা নিচ্ছেন। আর এটা হচ্ছে মাছ বাজারের মতো যার কাছ থেকে যত নেওয়া যায় ততই নিয়ে নিবে ভিসা স্পন্সরশিপের জন্য। সো এইখানে হচ্ছে এইখানেও সেইম স্কিলড ওয়ার্কার ভিসার মতো, প্রথমে কেউ তিন বছরে এপ্লাই করে থাকে।
তারপরে আবার দুই বছরের জন্য আপগ্রেড করে। এইটাতেও সেইম, আপনি পাঁচ বছর যদি এই দেশে থেকে যান, তারপরে আপনি আইলারের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। আপনি আইলার পেয়ে গেলে একদম ফ্রি হয়ে যাবেন, এই আশায় মানুষ এসে থাকে।
৫. ছাত্র ভিসা
অবশেষে আমি যে ভিসাটির কথা বলব, সেটা হচ্ছে সবচাইতে সবচাইতে সহজলভ্য একটি ভিসা। বর্তমানে যে ভিসাটা হচ্ছে আমার মতো গরিবদের জন্য, যারা একসাথে এক বস্তা টাকা ম্যানেজ করতে পারবেন না, তাদের জন্য। সো আমি এই ভিসাটায় এসেছি। আপনারাও চাইলে এই ভিসায় আসতে পারেন। এই ভিসাটা হচ্ছে স্টুডেন্ট ভিসা।
সো এই ভিসাটায় হচ্ছে আপনি আসতে গেলে ১৫ থেকে ১৬ লক্ষ টাকা খরচ করে আপনি এদেশে আসতে পারবেন। টিউশন ফি হাফ টিউশন ফি দিয়েও আসতে পারেন, আবার কোনো কোনো ইউনিভার্সিটি ফুল টিউশন ফি নিচ্ছে, আবার কোনো কোনো ইউনিভার্সিটি হচ্ছে ৭০%, ৮০% নিচ্ছে। ওইটা দিয়ে আর এক বছরের আইএচএস ফি দিয়ে কিন্তু আপনি এদেশে আসতে পারেন। মানে আসার সময় আপনার টাকাগুলো কম লাগবে।
তারপরে এখানে এসে ইনকাম করে আপনার পরবর্তী ভিসাতে আপগ্রেড করবেন। এইজন্য আমি বলি যে এটা হচ্ছে সবচাইতে সহজলভ্য একটা ভিসা এবং সবচাইতে কম টাকা খরচ করে এই দেশে এই ভিসায় আসা যায়। কিন্তু আসার পরে অনেক স্ট্রাগল রয়েছে। স্ট্রাগলগুলো নিয়ে পরবর্তীতে আর্টিকেল আসবে। প্রতিটা আপনাদেরকে যে পাঁচটা ভিসা বললাম, প্রতিটা ভিসা, স্পেশালি স্টুডেন্ট ভিসা, কেয়ার ভিসা, তারপরে স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা।
এই ভিসাগুলোতে কোন ভিসাতে কতটুকু সাফার করতে হয়, কতটুকু ভালো দিক রয়েছে, কতটুকু খারাপ দিক রয়েছে, এগুলো নিয়ে আমি বিস্তারিত আর্টিকেলযদি আপনারা চান, আমি দেব। একদম বাস্তব। আমরা যেরকম দেখছি সেগুলোই আপনাদেরকে বলব। তো আপনারা কমেন্ট করে জানাবেন আপনাদের কোন ভিসাটা সবচাইতে বেশি ভালো লাগছে বা আপনারা আরও কী জানতে চান। কমেন্ট করে জানাবেন। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।