বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য নতুন ভোটার আইডি কার্ড: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও আবেদন প্রক্রিয়া বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান, তাহলে কী কী ডকুমেন্টস প্রয়োজন এবং কীভাবে আবেদন করবেন, তা জানা জরুরি। এই আর্টিকেলে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করব নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কীভাবে আবেদন করবেন?
নতুন ভোটার হতে হলে আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। এটি দুইভাবে করা যায়:
- অনলাইনে আবেদন: আপনি www.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সহজেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
- অফলাইনে আবেদন: আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ফরম সংগ্রহ করে হাতে লিখে আবেদন করতে পারবেন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস প্রয়োজন:
১. অনলাইন জন্মসনদ
- আপনার জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই অনলাইনে থাকতে হবে।
- জন্মসনদ বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় এবং ডিজিটাল ফরম্যাটে থাকতে হবে।
২. পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড
- আপনার পিতা এবং মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
- যদি পিতা বা মাতা মৃত হন, তাহলে মৃত্যু সনদের ফটোকপি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জমা দিতে হবে।
৩. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
- আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে:
- পঞ্চম শ্রেণী পাস হলে পিএসসি সার্টিফিকেট।
- অষ্টম শ্রেণী পাস হলে জেএসসি সার্টিফিকেট।
- এসএসসি বা ডিগ্রি সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
৪. বিবাহিত হলে কাবিননামা
- যদি আপনি বিবাহিত হন, তাহলে কাবিননামার ফটোকপি জমা দিতে হবে।
৫. রক্তের গ্রুপিং এবং অন্যান্য কাগজপত্র
- রক্তের গ্রুপিং সংক্রান্ত কাগজ।
- চৌকিদারি ট্যাক্স বা হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজের ফটোকপি।
৬. নাগরিক সনদপত্র এবং প্রত্যয়ন পত্র
- নাগরিক সনদপত্র এবং প্রত্যয়ন পত্রের মূল কপি জমা দিতে হবে।
৭. বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি
- আপনার নিজের নামে বা পিতা-মাতা, দাদা-দাদীর নামে বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি জমা দিতে হবে।

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া
সকল ডকুমেন্টস A4 কাগজে প্রিন্ট বা ফটোকপি করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। এছাড়া:
- আবেদনপত্র (ফরম নম্বর ২): অনলাইনে বা অফলাইনে পূরণ করা আবেদনপত্র সংগ্রহ করে এটেস্টেড করে জমা দিতে হবে।
- অভিভাবকের তথ্য: আবেদনপত্রের ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর কলামে অভিভাবকের নাম এবং ভোটার আইডি কার্ড নম্বর উল্লেখ করতে হবে। অভিভাবকের স্বাক্ষরও প্রয়োজন।
- মেম্বার/কাউন্সিলর/চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর: আবেদনপত্রের ৪০ এবং ৪১ নম্বর কলামে মেম্বার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যানের নাম, ভোটার আইডি কার্ড নম্বর, সিল এবং স্বাক্ষর থাকতে হবে।
নির্বাচন অফিসে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া
সকল ডকুমেন্টস এবং আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচন অফিসে গিয়ে নিম্নলিখিত ধাপগুলো সম্পন্ন করতে হবে:
- বায়োমেট্রিক তথ্য: চোখের আইরিশ স্ক্যান এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করতে হবে।
- এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আপনি বাংলাদেশের বৈধ নাগরিক হিসেবে ভোটার আইডি কার্ড পাবেন।
প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর
ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে আমার কী কী নথিপত্রের প্রয়োজন হবে?
ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে, আপনার সাধারণত একটি বৈধ পরিচয়পত্র, বসবাসের প্রমাণপত্র এবং সম্ভবত আপনার সামাজিক নিরাপত্তা নম্বরের প্রয়োজন হবে। বিস্তারিত জানার জন্য আপনার রাজ্যের নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তাগুলি পরীক্ষা করুন।
পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে আমি কি আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারি?
হ্যাঁ, বেশিরভাগ রাজ্যে একটি বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণত পরিচয়পত্র হিসেবে গৃহীত হয়। শুধু নিশ্চিত করুন যে এটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে!
অনলাইনে নিবন্ধন করলে কি আমাকে বসবাসের প্রমাণপত্র প্রদান করতে হবে?
এটি আপনার রাজ্যের নিয়মের উপর নির্ভর করে। অনেক রাজ্য আপনাকে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স বা আইডি নম্বর প্রদান করলে অতিরিক্ত প্রমাণ ছাড়াই অনলাইনে নিবন্ধন করার অনুমতি দেয়।
আমার যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে তাহলে কী হবে?
যদি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে, তাহলে আপনি প্রায়শই অন্যান্য পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে পারেন, যেমন পাসপোর্ট, সামরিক পরিচয়পত্র, অথবা রাজ্য-প্রদত্ত পরিচয়পত্র।
ভোটার নিবন্ধনের জন্য কি কোন সময়সীমা আছে?
হ্যাঁ, বেশিরভাগ রাজ্যে নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে নিবন্ধনের সময়সীমা থাকে। আপনার রাজ্যের সময়সীমা পরীক্ষা করে দেখুন যাতে আপনি সময়মতো নিবন্ধিত হয়েছেন কিনা!
আমি যদি সম্প্রতি স্থানান্তরিত হয়ে থাকি, তাহলে কি আমি ভোটার নিবন্ধন করতে পারি?
অবশ্যই! আপনি যদি স্থানান্তরিত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার নতুন ঠিকানা দিয়ে আপনার ভোটার নিবন্ধন আপডেট করতে হবে। এর জন্য আপনার নতুন বসবাসের প্রমাণ প্রদানের প্রয়োজন হতে পারে।
শেষ কথা?
উপরে উল্লিখিত ৮ থেকে ১০টি ডকুমেন্টস জমা দিয়ে আপনি খুব সহজেই নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারবেন। অনলাইনে বা নির্বাচন অফিসে আবেদন করে এবং বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আপনি বাংলাদেশের বৈধ নাগরিকত্ব লাভ করতে পারবেন। সঠিক ডকুমেন্টস এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে নতুন ভোটার হওয়া এখন আরও সহজ।